top of page

বিজয় দিবসের কবিতাঃ মজিবুল হক মণি



বিজয় অর্কিড


একটি অর্কিড ঘরে আনবো, ঘর সাজাবো।

হাজার বছরের প্রতীক্ষা-

আমার একটা অর্কিড চাই!

প্রত্যাশার বেদিমূলে কত শত রক্তক্ষরণ,

দ্রোহের দাবানলে কত শত মরণ পীড়ন।

কবিতার উচ্চারণে, অন্তরের গানে গানে,

আকাশ ফাটানো, দিগন্ত কাঁপানো শ্লোগানে-

আমি একটি অর্কিড চেয়েছি।

আমার অস্তিত্বকে বাজি রেখে-

জন্ম জন্মান্তরে আমি একটি অর্কিড চেয়েছি।

অর্কিড ছাড়া আমার ঘর আমার হয় না,

আমার রক্ত-শরীর আমার হয় না,

আমার আয়েশি সুখ আমার হয় না,

এই আমাকেই আমার মনে হয় না,

আমার একটা অর্কিড চাই-ই।

অবশেষে একদিন-

অর্কিড আমায় ধরা দেয়।

অনেক প্রত্যাশা আর তিতিক্ষার ফসল

কলম্বিয়া মার্কেটের সুন্দরী এই অর্কিড,

এখন আমার হাতে।

অর্কিড এখন একান্তই আমার।

তার দুধে-আলতা রঙ্গের পাপড়ির ছুঁয়া-

আমার অস্তিত্বে দোলা দেয়।

অর্কিড স্থান পায় আমার সিটিং রুমের কোনে।

অর্কিড পাল্টে দেয় আমার ঘর, বদলে দেয় আমাকে।

ঘরের সবকিছুতেই অর্কিডের যাদু, সবকিছুই আজ আপন।

আমিও আজ নিজের কাছে ভীষণ আপন।

কিছুদিন যেতে না যেতেই-

অর্কিডের পাতাগুলো কেমন যেন নেতিয়ে যাচ্ছিলো,

একটা অযাচিত রুক্ষতা ঢেকে দিচ্ছে তার লাবন্যতা,

আমি জানতাম না অর্কিডের রুগ হয়,

সেও চায় শুশ্রুষা, বেঁচে থাকার রক্ষা কবচ,

আসলে আমি এসবের কিছুই জানি না।

আমার ফুল সোহাগী বউ-

অর্কিডের সেবা পদ্ধতি আহরণে নিতান্তই পেরেশান।

এরই মধ্যে অর্কিডের জড়ে বাসা বাঁধে

সুযোগ সন্ধানী কীট।

কামড়ে ধরে তার বেড়ে উঠা মূলাধার।

খামছে ধরেছে অর্কিডের শ্যামল শরীর।

অর্কিড আজ রুগ্ন, বিবর্ণ, নুহ্য।

কলম্বিয়া মার্কেটের সেই অর্কিডের মতোই-

আমি একদিন বিজয় পেয়েছিলাম।

আমার সত্তার বিজয়, হাজার বছরের আরাধ্য বিজয়।

আমার মা-মাটি ও মানুষের বিজয়।

বিজয় আজ সেই অর্কিডের মতোই-

অবাঞ্ছিত পোকার দখলে।

আমার পরমারাধ্য বিজয় এখন

অর্কিডের মতই-রুগ্ন, বিবর্ণ, নুহ্য।

19 views0 comments
bottom of page