স্বপ্নের খোঁজ
স্বপ্ন ভাঙ্গা এক বুক যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে থাকার সাজা আমি পেয়েছি।
বারে বারে তাই ভেঙ্গে যাওয়া সেই স্বপ্নকেই খুঁজেছি।
প্রখর তাপে মাঝ আকাশে আমি উড়েছি যেন একটি চিল।
আকাশের বুকে দেখেছি আমায় একা বড্ড একা, কোথাও পাই নি মিল।
স্বপ্নের খোঁজে ছুটেছি সাগর তীরে,স্বপ্ন কোথায় গেল ফেলে আমাকে।
কবিতায় কবিতায় খুঁজে চলেছি হারানো স্বপ্ন তোমাকে।
স্বপ্ন তোমায় খুঁজব বলেই উঠেছি পাহাড়ি পথ বেয়ে।
তোমাকে না পেয়ে ফিরেছি বুক ভাঙ্গা গান গেয়ে।
স্বপ্ন তুমি তো আমার বাউণ্ডুলে মনের একতারা।
কেন আমায় রেখে চলে গেলে তুমি!আমি যে দিশাহারা।
তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে হাজির হলাম জঙ্গলে।
বন্য প্রাণীরা জানতে চাইলো,তুমি তোমার স্বপ্নকে দেখতে পেলে?
পাগলের মতো ক্যানভাসে ক্যানভাসে এঁকেছি তোমার ছবি।
তোমার খুঁজতে গিয়েই আমি এখন এক অনামী কবি।
স্বপ্ন তোমায় খুঁজতে গিয়েই বিনা তামিলেই গাইছি গান।
স্বপ্ন তোমার আছে মনে!ছাত্র জীবনে কেমন দিতাম স্লোগান।
তোমাকে দেখেই আমার প্রথম প্রেমের কবিতা,চিঠির পাণ্ডুলিপি।
তুমি ছিলে আমার স্বপ্ন,তুমিই আমার জীবনের প্রতিলিপি।
আমার স্বপ্ন আমার থেকে হারিয়েছো তুমি অনেক বছর আগে।
তোমাকেই নিয়ে দেখতে স্বপ্ন,আমার আজও ভালো লাগে।
স্বপ্ন তোমায় না পেয়েও আমি এখনও স্বপ্ন দেখি।
তোমাকে কল্পনা করেই আমার কবিতার আঁকিবুঁকি।
অনেক কিছুই ছেড়েছি অভ্যেস কালের নিয়মে।
তবুও তোমাকে খুঁজে চলেছি এখনও এই অশান্ত সময়ে।।
বিকল্প
পথের যে প্রান্তটি মিশেছে মাটির সাথে,
যেন আমার খুব চেনা সে প্রান্তটি,ঠিক তাই।
ঐখানে আমার সব ঠিকানা এসে মিশেছিল,
আমি এখনও সেই রাস্তার বাঁকে নিজেকে দেখতে পাই।বাল্যের সেই দিগন্তরেখা আমাকে এখনও
করে আকর্ষণ সমানে।
ফেলে আশা দিনগুলো ছিল তো ঐ দিগন্ত কেন্দ্রিক,
ওখানেই বুনেছিলেম নকল বুদিগড় পরম যতনে।
পাহারায় ছিল না তখন কোন চৌকিদার,
সবুজের সমারোহ,জলের প্রাচুর্য,ছিল না কোন অভাব।
দূষণ তখনও গ্রাস করেনি আমার সেই প্রান্তকে,
হাসিঠাট্টা মজা,খুনসুটি নিয়ে ছিল তখনের স্বভাব।
জীবন ছিল জলের মতোই স্বচ্ছ,স্বাচ্ছন্দ্য ছিল মননে,
একান্ত নিজস্ব সেই ছবির মতোন নীল দিগন্ত।
আমার দিগন্তে বসন্তে ফুল নাইবা ফুটতো,
অন্তরের অন্তস্তলে খেলা করতো সারাক্ষণই বসন্ত।
আমিও করতাম উপভোগ তাড়িয়ে তাড়িয়ে সেই প্রাণোচ্ছল বসন্তকে।
দিগন্ত তখন আমার হাতের মুঠোয় ছিল,
ভালোবাসতাম দূষণহীন,কোলাহলহীন,শান্ত,ভীষণ প্রিয় প্রান্তকে।
বিকল্প চিন্তা হলো শুরু,
দখলদার এলো দিগন্তরেখার।
কুমন্ত্রণার বন্যা বয়ে গেল চারদিক থেকেই,
বসন্ত চলে গেল চিরতরে জীবন থেকে আমার।
হারিয়ে গেল কোন সে উন্নয়নের পথে ধরে,
আমার দিগন্তরেখা আজ ইট,পাথরের নির্জীব মূর্তি।বাইরে থেকে দেখতে সে ভীষণ চকচকে,
আসলে সে প্রাণহীন জড়বস্তু,মনে নেই কোন তার ফুর্তি।
কোলাহলপূর্ণ,মননে দূষণ,চেতনায় নেই আর
কোন সারবত্তা তার।
সবুজের সমারোহ আর দেখা যায় না সে প্রান্তরে,
সলিল সমাধি হয়েছে বাল্যের সেই দিগন্তরেখার।।