ভাটায় হারিয়ে যাওয়া হরিণেরা
(যুগলবন্দি)
ভাটার কচুরিপানার কোন আত্মীয় থাকে না-
থাকে না ঠিকানা-বিড়ম্বনা
চিঠি লেখার তাড়া নেই তার, পাবারও।
তবু- নিরলস বেকার পোস্টবক্সগুলো
নিথর সাক্ষী হয়- ’বধূর প্রতীক্ষার’, -
ওই বুঝি এলো কোন ডাক!
নীলাভ বেগুনী পাপড়ির নির্যাস-
অথবা সুরভিত জ্যোৎস্নার
আবরণে ঢাকা করুন দু'টো চোখ-
অনেক কথাই বলে
হাতের রঙে আঁকা নকশায়
বিলুপ্তির চিরকুটটা তখনো ধরা।
অথচ ভাটার স্রোতে ভাসা কচুরির রঙই যেন সত্য সনদ পায়।
চুপ...
একদম নিশ্চুপ
আঁকাবাঁকা পথটুকু পেরোলেই
গাঢ় হয় স্বপ্ন
গাঢ়তর গোলাপি চিবুকের মতো...!
হাজার বছরের পুরনো পাথর, অতএব-
ভিন্ন এক ছেলেখেলা
গোলাপি রং মহামারীর মত ছড়ায়-
চিবুক থেকে বুকে, বুক থেকে আরো নিচে-
যেন ভাটার শেষ প্রান্তের মহাসাগরে।
যেন এক হরিণপালক
সন্তর্পণে নেমে যায় স্নানে
তারপর খয়েরী কারুকার্যময় পাড় ধরে
হারিয়ে যায় নিবিড় অরণ্যে।
হরিণেরাও চিঠি লেখে, ঠিকানা লেখা থাকে না খামে
ঠিকানা হারাতে জানে ওরা, খুঁজে পেতে জানে না।
একদিন, ভাটার স্রোতের সাথে-
হরিণেরাও ভেসে যায় কচুরির মত...
ভাঙনের পাশে নির্বাক প্রহরীর মত
দাঁড়িয়ে থাকে- পোস্টবক্স,
এক টুকরো দীর্ঘশ্বাস, আর হরিণের আধছেঁড়া চিরকুট!
তারপর থেকে পৃথিবীতে আর ভাটা হয় না, জোয়ারে-
ভেসে যায় দিগন্ত...
মাতম
শতচ্ছিন্ন জামার মতো পড়ে আছে মুখ/দেহ পর্বতের সূক্ষ্ম কারুকাজ এবং সুগভীর খাদ গোলাপি শাল জড়িয়ে মন ভালো করা কোনও গান বাজছে দূরে এক পা, দু'পা, চার'পা... এগিয়ে যায় সন্ততিহীন এসো, উৎফুল্ল বাতাসে একটু কোমর বেঁধে নাচি মাতমের মতো
প্রাগৈতিহাসিক
আমি রূপান্তরিত হতে চাই কাঠগোলাপে...
ফুলটির সুস্পষ্ট বর্ণনা যদিও জানি না, তবু চাই
কাঠের মন গলিয়ে ফুলটি ফুটেছিল বোধহয়
আমি পাথরের মন গলাতে চেয়ে
কাঠগোলাপে রূপান্তরের দরখাস্ত করেছি
নাম হয়তো হয়ে যাবে পাথরগোলাপ
হোক, ঈশ্বরের কৃপা ভেবে মেনে নেবো সেই নাম
ঈশ্বর এবং পাথরের কৃপাই
আমার শতাব্দী প্রাচীন প্রেম