রক্তাক্ত আগস্ট ও জিবরাইলের ডানা
তুমি জানতেনা তোমার চারদিকে
বেড়ে উঠছে বিষাক্ত আগাছার জঞ্জাল
কাঁটাযুক্ত ক্যাকটাস,
যে মরুর শীতলতা তুমি তার নির্গত উত্তাপে
তোমার শরীরও যে ঝলসে যাবে বোঝনি
তাই বিস্ফারিত চোখে দেখলে
একপৃথিবী অবিশ্বাস
বিশ্বাসঘাতক ইবলিসের ধূর্তরূপ,
এক আঙুল নয়,দশ আঙুলের স্পর্শে নেভাতে
গেলে উত্থিত দাবানলের জ্বলন্ত প্রবাহ
কিন্তু তার আগেই লুটিয়ে পড়লে
অকৃতজ্ঞ ভূমির দেহবিন্যাসে।
হঠাৎ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো ত্রিশলক্ষ
শহীদের প্রশান্ত কবর
আরশের খোপ থেকে চিৎকার করে
নামলো সাদা কবুতরের ঝাঁক
হৃদয়ছেঁড়া পালকে ঢেকে দিলো
তোমার নশ্বরদেহ।
স্তম্ভিত বিবেক মুখলুকালো অচলায়তন
শিরার গভীরে।
পবিত্র রক্তস্রোতে ভেসে গেল বত্রিশ নম্বর,
একাত্তরের তেজ, রেসকোর্স ময়দান
ফিকে হলো মানচিত্রের সজীবতা,শহীদ মিনার।
পরান মাঝির সুরেলা কণ্ঠ থমকে গেল হঠাৎ
থমকে গেল আব্দুল আলিম, আব্বাস উদ্দিনের
সুরের ভৈরবী
নির্বাক চিত্রের মতো স্থির হলো হাট-বাজারের কোলাহল ,পথিকের পদযুগল।
গলির মুখে ঘেউ ঘেউ করা কুকুরটি
তাকিয়ে রইলো নির্বাক,
ভুলে গেলেন মা ঘুম পাড়ানি গান
হৃদয় ভেদ করা দীর্ঘশ্বাসে বারবার ভিজল
শাড়ির আঁচল।
জিবরাইল তার ছয়শত সবুজডানা
মেলে ধরলো তোমার সম্মুখে
শান্তির বাণী আওড়াতে আওড়াতে তুমি
পাড়ি জমালে শান্তির রাজ্যে,
দৃঢ়পায়ে হেঁটে পার হলে পুলসিরাত
পৌঁছে গেলে মহাকাঙ্খিত ঠিকানায়।